সোমবার, ৮ মে, ২০১৭

রাস্তা বন্ধু (ঋতুপর্ণা মজুমদার)

অমন একটা রাস্তা আমায় দাও না,
ওই যে দেখেছো ওই রাস্তাটা?
পাইন বনের ফাঁক দিয়ে
এঁকে বেঁকে চলেছে,
খাদের ধার ঘেঁসে কখনো
লাল সুরকির ইতিহাস,
কখনও বা অভিযোগ আধ ভাঙ্গা হয়ে
নীরবের গান সাধে।
পথ চলতির সাথীরা এক পাকদণ্ডী বেয়ে উঠেই হয়ত হাঁপাচ্ছে।
ওদের হাতে এক ঘুঁট জল তুলে দিয়েই আবার চলেছে রাস্তা।
যত দূর চোখ যায় দ্যাখো,
এগিয়ে চলেছে নিজের বাঁক নিজেই এঁকে।
কখনও সঙ্গে পৃথিবী, কখনও রাতের আঁধারে ভাবি,
পথ হারাল না তো?
পথের পথ হারানো কিন্তু ভারি মজার, তাই না;
হারিয়েও নিজেকে সঙ্গে করে আবার পথ চলা।
আছে কি রাস্তার শেষ? শেষ কোথায়?

অমন একটা রাস্তা আমায় দাও না,
শেষ নেই যার।
যেন একবার ছড় তুললেই হল,
বাজতে থাকবে আপনা থেকেই, আজীবন।
তানপুরা তো অমন নয়। তারও পরিত্যাগ আছে।
রেডিও? ব্যাটারি শেষেই কুপোকাত।
যদি বলি চুলে বিলি কেটে দাও, তারও “ধুর ভাল্লাগে না” আছে।
দূরে সরে যাওয়ার আনন্দে কাছে আসার শেষ আছে,
পাখিরা বাড়ি ফিরলেই নিঝুম সন্ধ্যে আছে,
সারাদিন গাড়ির প্যা পোঁ – শুনেছ কখনও? ওদেরও ক্লান্তি আছে।
জীবন শুরু হলেই মৃত্যুবার্ষিকী দিয়ে তার শেষ আছে।

আর ওই রাস্তা টা? শেষ নেই ভেবে দেখো।
বাড়ি ফিরছি না বলে বেরিয়েই –
ঠিক থাকবে তোমায় আঁকড়ে
অজানার ঢালে পায়ের শিকড়ে।
দাও না, অমন একটা রাস্তা আমায়,
বন্ধু চাই,
যার শেষ নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন