#ঘুগনি
দুদিন হলো তাস খেলাটা বন্ধ।সেদিন সুকুমার এর সাথে ঝামেলার পর থেকে।
১১.০৫ এর শেষ ট্রেনটা এরা সবাই ধরে। লেদার কমপ্লেক্স এর ১ নম্বর গেট থেকে বাসে পার্কসার্কাস স্টেশন আসে মনিরুল। বালিগঞ্জ থেকে ওঠে নিতাই। বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছেই ঘুগনি বিক্রি করে। মথুরাপুর নামে।হাঁড়িতে চারজনের মতন করে ঘুগনি নিয়েই ওঠে। সুকুমার আর শ্যামল শিয়ালদা থেকেই জায়গা রেখে আসে।
দুদিন ধরে সুকুমার নেই। সোমবার রাতে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তাস খেলায় অতন্ত্য আপাত সাধারণ একটা ব্যাপার।
"সুকুটা বড্ড বেশি গায়ে মাখেরে শ্যামল। তা বাপু তাস খেলতে এয়েছিস, এট্টু তো ইদিক ওদিক হবোই।"
"আসলে লোকডা বড় সৎ মানুষ গো নিতাই দা। সেই হরেকেষ্ট কোঙার যখন আসত হাই ইস্কুলের মাঠে , সেই থেকে লাল পার্টি করে ও দাদা। ঘর ভর্তি কেতাব।" মনিরুল বলল।
"তোকে এত খবর কে দ্যায় রে ?"শ্যামল জানতে চায়।
"আরে আমার চাচা আর সুকুদা হকার ইউনিয়ন করে গো একসাথে বড়বাজারে।"
"নে ঘুগনিটা শেষ করে বাপধন তোরা।"
"কাকা একটু ঘুগনি পাওয়া যাবে?" ছেলেটা গতকাল থেকে এই কামরায় যাচ্ছে। শিয়ালদা থেকেই ওঠে। বাচ্ছা ছেলে। এখনো সরু গোঁফের রেখায় ব্লেড পড়েনি একবারও।
গতকাল ওদের পাশে বসেই ফিরল।
"বাপি ঘুগনি খেতে খুব পছন্দ করে।এক বাটি একটু হবে কাকা? এই টিফিন বক্স করে বাড়ি নিয়ে গে দিতুম।"
"আমাদের ঘুগনিখেকো লোকডা দুদিন ধরে আসতিছে না। তা বেশিই আছে। নে যা তুই।"নিতাই আপত্তি করেনা।
"এই ছাওয়াল তোর বাপ এখন এই অবস্থায় ঘুগনি খাবে?" ছেলেটা তেউনি পরে। মনিরুলের কথায় ব্যাপারটা বাকিদের খেয়াল হল।
"চাচা বাপি সোমবার এই ট্রেনে তোমাদের সাথে তাস খেলে আর বাড়ি ফেরেনি গো। পথেই ব্রেন ইসট্রোক। ভোরবেলা তেই সব শেষ।"
ছেলেটা ঘুগনির গন্ধটা শুকতে লাগলো।
#বট
বয়সের কোনো গাছ পাথর নেই। বা উল্টোটা, গাছের কোনো বয়স পাথর নেই! ৭০-৭২ কিংবা তারও আগে থেকে সে আছে। যখন লাইনের এপার ছিলনা, শুধু ওপার। বোসেদের জ্ঞাতি গুষ্টি। আর সুভাষ বোসের পৈতৃক ভিটেটা। এপারে তো তখন ধান আর ধান। সে নিজে দেখেছে কুমীর আসতে।শিয়াল তো কদিন আগে অব্দি ছিল। মানুয়াদের তিনতলাটা তখন কোথায়। একটু ঘাড় উচালেই ওপারের সরস্বতীর মাঠ, আর এপারে তো সেই বাঁকাতলা অব্দি দেখতো।
আদতে সে বেওয়ারিশ।পিতৃ পরিচয়হীন। কে যে কবে চারা ফেলে দিয়ে গেছিলো, নাকি নিজেই ভুঁইফোড় হয়ে নির্লজ্জের মত জায়গা দখল করেছিল মনে পরেনা।আসলে বয়সের তো কোনো গাছ পাথর নেই। সে নকশাল দেখেছে, ৭০-৭৭ দেখেছে, বাম দেখেছে, অতিবাম,ডান সবই গিলেছে।
সেই যেবার অক্ষয় বোসের ছোট ছেলেটাকে কংগ্রেসিরা বস্তা করে নিয়ে এসে ক্ষেতের মাঝে পুঁতে দিল, খানিক ভয় করেছিল বটে। প্রথমে তো ছেলে গুলো ঠিক করেছিল ওর গোড়াটা খুঁড়ে সেখানেই..না জায়গাটায় কোনো শহীদ বেদী নেই, ওটা তো বাম আমলে তৈরি হওয়া মার্কেট। সবই জাতির উন্নতির জন্য। প্রথম প্ৰথম ভয় করলেও পরে এরম আরো ঋজু বোস ওর অভিজ্ঞতাটা পুষ্ট করেছিল।
৭৮-৮০ অব্দি মনে প্রানে ঘোর বামপন্থীই ছিল।কিন্ত বাধ সাধল কমরেড এক্স সরকার(যেহেতু জীবিত লোকেদের নামে বলতে নেই)। কংগ্রেসের আ্যকশন স্কোয়াডের বাপি ঘোষ অনেকদিনের টার্গেট ওর। যবে থেকে দেখেছিল দিদির সরস্বতী পুজোর লাল শাড়িটা কালচে রক্তে শুকিয়ে ফাঁসুড়ের গামছার মতো দেখাচ্ছে।যাতে যৌবন সাজাপ্রাপ্ত। দ্রুত বদলে যাওয়া আর্থ সামাজিক যোগসাজসে বাপিও বদলাতে চেয়েছিল। কিন্তু গণতন্ত্রের নিয়মানুযায়ী যা হয়ে আসছে, উঁচু তলার 'বদলা নয় বদল চাই' আপ্তবাক্যের সাথে সাথে বাপিকেও মরতে হলো।দিদি কে বিয়ে করে ঘর করার কাকুতি মিনতিতেও কমরেড সরকার ভেঙে পড়েনি। শ্রেণী শত্রু মুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েই নিজে হাতে ছুরিটা চালিয়েছিল। উন্মাদনায় মৃত যোনি কি তবে কাটা নলির ফিনকি ওঠা রক্তে প্রাণ ফিরে পাবে? ভেবেই শিউরে উঠেছিল ও। সেই তো সবে শুরু।
বয়স তো কম না। কত কান্ডই তো দেখল।সেই যখন রেল স্টেশনটা পাকা হলো, সে এক হুলুস্থুল কান্ড।মুটে মজুর মিস্ত্রি গুলো তো ওর চারপাশেই তাঁবু গেড়েছিল।কত রকম মাপ ঝোঁক শিখল।শিখল সরকারি মাল ঝেঁপে দিয়ে নিজের উঠোন বাঁধানোর কায়দা।ইট বালি পাথর ধুলোয় কদিনেই হাঁপিয়ে উঠেছিল। আসলে সেটা ছিল গ্রামীণ অর্থনীতিতে শহুরে পোঁচ লাগার উপসর্গ মাত্র।
তবে ওর কদরও বাড়ল।লোকে স্টেশন ধারের জায়গাটাকে ওর নামেই নাম দিয়ে দিল।হয়ত বয়সের সম্মানের কথা ভেবেই। বা সহজ করে ডাকার সুবিধার জন্যে।
ওর আশপাশটা দ্রুত পাল্টাচ্ছিল। যুক্তফ্রন্ট আমলে যে জায়গা ধানি জমি ছিল, সেখানেই দোকানে বসে সব ছোট মেজ বড় কমরেডরা বাবরি ভাঙার খবর শুনলো।রেল লাইন উন্নত হবার সাথে সাথে কাটা পড়াটাও সমানুপাতিক ছিল, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত।অগত্যা হিসাব ব্যস্তানুপাতিক করার জন্যে গজিয়ে উঠল মন্দির। ওর গা ঘেষেই। ও ভক্তি করতে শিখল।
চিত্রনাট্য দ্রুত বদলাচ্ছিল। জন্মদিনের সানাই থেকে শুরু করে শ্রাদ্ধের মন্ত্র অব্দি রপ্ত হয়ে গেছিল। ডান থেকে বাম , বাম থেকে ডান দেখলো। মনে আছে সোভিয়েত রাশিয়া পতনের পরের সকালটা। সেই প্ৰথম ওর মাইক বেঁধে সভা দেখা।তার পরে তো পেট্রোল,ডিজেল,অনাহার,অবিচার,মূল্যবৃদ্ধি এবং ইত্যাদি ছিলই অথবা আছে। ক্রমে দুর্গা,কালী হালে গণেশ সবাই যোগ দিল।লাশ গেলো মার্কেট এলো, প্যাডেল গেলো মোটর এলো, ভিটে গেল মাটি এল(যেহেতু রামকৃষ্ণ দেব বলেছেন টাকা মাটি, মাটি টাকা)।
অতএব বয়স তো কম না।কোনো গাছ পাথর নেই, বা উল্টোটা।
দুদিন হলো তাস খেলাটা বন্ধ।সেদিন সুকুমার এর সাথে ঝামেলার পর থেকে।
১১.০৫ এর শেষ ট্রেনটা এরা সবাই ধরে। লেদার কমপ্লেক্স এর ১ নম্বর গেট থেকে বাসে পার্কসার্কাস স্টেশন আসে মনিরুল। বালিগঞ্জ থেকে ওঠে নিতাই। বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছেই ঘুগনি বিক্রি করে। মথুরাপুর নামে।হাঁড়িতে চারজনের মতন করে ঘুগনি নিয়েই ওঠে। সুকুমার আর শ্যামল শিয়ালদা থেকেই জায়গা রেখে আসে।
দুদিন ধরে সুকুমার নেই। সোমবার রাতে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তাস খেলায় অতন্ত্য আপাত সাধারণ একটা ব্যাপার।
"সুকুটা বড্ড বেশি গায়ে মাখেরে শ্যামল। তা বাপু তাস খেলতে এয়েছিস, এট্টু তো ইদিক ওদিক হবোই।"
"আসলে লোকডা বড় সৎ মানুষ গো নিতাই দা। সেই হরেকেষ্ট কোঙার যখন আসত হাই ইস্কুলের মাঠে , সেই থেকে লাল পার্টি করে ও দাদা। ঘর ভর্তি কেতাব।" মনিরুল বলল।
"তোকে এত খবর কে দ্যায় রে ?"শ্যামল জানতে চায়।
"আরে আমার চাচা আর সুকুদা হকার ইউনিয়ন করে গো একসাথে বড়বাজারে।"
"নে ঘুগনিটা শেষ করে বাপধন তোরা।"
"কাকা একটু ঘুগনি পাওয়া যাবে?" ছেলেটা গতকাল থেকে এই কামরায় যাচ্ছে। শিয়ালদা থেকেই ওঠে। বাচ্ছা ছেলে। এখনো সরু গোঁফের রেখায় ব্লেড পড়েনি একবারও।
গতকাল ওদের পাশে বসেই ফিরল।
"বাপি ঘুগনি খেতে খুব পছন্দ করে।এক বাটি একটু হবে কাকা? এই টিফিন বক্স করে বাড়ি নিয়ে গে দিতুম।"
"আমাদের ঘুগনিখেকো লোকডা দুদিন ধরে আসতিছে না। তা বেশিই আছে। নে যা তুই।"নিতাই আপত্তি করেনা।
"এই ছাওয়াল তোর বাপ এখন এই অবস্থায় ঘুগনি খাবে?" ছেলেটা তেউনি পরে। মনিরুলের কথায় ব্যাপারটা বাকিদের খেয়াল হল।
"চাচা বাপি সোমবার এই ট্রেনে তোমাদের সাথে তাস খেলে আর বাড়ি ফেরেনি গো। পথেই ব্রেন ইসট্রোক। ভোরবেলা তেই সব শেষ।"
ছেলেটা ঘুগনির গন্ধটা শুকতে লাগলো।
#বট
বয়সের কোনো গাছ পাথর নেই। বা উল্টোটা, গাছের কোনো বয়স পাথর নেই! ৭০-৭২ কিংবা তারও আগে থেকে সে আছে। যখন লাইনের এপার ছিলনা, শুধু ওপার। বোসেদের জ্ঞাতি গুষ্টি। আর সুভাষ বোসের পৈতৃক ভিটেটা। এপারে তো তখন ধান আর ধান। সে নিজে দেখেছে কুমীর আসতে।শিয়াল তো কদিন আগে অব্দি ছিল। মানুয়াদের তিনতলাটা তখন কোথায়। একটু ঘাড় উচালেই ওপারের সরস্বতীর মাঠ, আর এপারে তো সেই বাঁকাতলা অব্দি দেখতো।
আদতে সে বেওয়ারিশ।পিতৃ পরিচয়হীন। কে যে কবে চারা ফেলে দিয়ে গেছিলো, নাকি নিজেই ভুঁইফোড় হয়ে নির্লজ্জের মত জায়গা দখল করেছিল মনে পরেনা।আসলে বয়সের তো কোনো গাছ পাথর নেই। সে নকশাল দেখেছে, ৭০-৭৭ দেখেছে, বাম দেখেছে, অতিবাম,ডান সবই গিলেছে।
সেই যেবার অক্ষয় বোসের ছোট ছেলেটাকে কংগ্রেসিরা বস্তা করে নিয়ে এসে ক্ষেতের মাঝে পুঁতে দিল, খানিক ভয় করেছিল বটে। প্রথমে তো ছেলে গুলো ঠিক করেছিল ওর গোড়াটা খুঁড়ে সেখানেই..না জায়গাটায় কোনো শহীদ বেদী নেই, ওটা তো বাম আমলে তৈরি হওয়া মার্কেট। সবই জাতির উন্নতির জন্য। প্রথম প্ৰথম ভয় করলেও পরে এরম আরো ঋজু বোস ওর অভিজ্ঞতাটা পুষ্ট করেছিল।
৭৮-৮০ অব্দি মনে প্রানে ঘোর বামপন্থীই ছিল।কিন্ত বাধ সাধল কমরেড এক্স সরকার(যেহেতু জীবিত লোকেদের নামে বলতে নেই)। কংগ্রেসের আ্যকশন স্কোয়াডের বাপি ঘোষ অনেকদিনের টার্গেট ওর। যবে থেকে দেখেছিল দিদির সরস্বতী পুজোর লাল শাড়িটা কালচে রক্তে শুকিয়ে ফাঁসুড়ের গামছার মতো দেখাচ্ছে।যাতে যৌবন সাজাপ্রাপ্ত। দ্রুত বদলে যাওয়া আর্থ সামাজিক যোগসাজসে বাপিও বদলাতে চেয়েছিল। কিন্তু গণতন্ত্রের নিয়মানুযায়ী যা হয়ে আসছে, উঁচু তলার 'বদলা নয় বদল চাই' আপ্তবাক্যের সাথে সাথে বাপিকেও মরতে হলো।দিদি কে বিয়ে করে ঘর করার কাকুতি মিনতিতেও কমরেড সরকার ভেঙে পড়েনি। শ্রেণী শত্রু মুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েই নিজে হাতে ছুরিটা চালিয়েছিল। উন্মাদনায় মৃত যোনি কি তবে কাটা নলির ফিনকি ওঠা রক্তে প্রাণ ফিরে পাবে? ভেবেই শিউরে উঠেছিল ও। সেই তো সবে শুরু।
বয়স তো কম না। কত কান্ডই তো দেখল।সেই যখন রেল স্টেশনটা পাকা হলো, সে এক হুলুস্থুল কান্ড।মুটে মজুর মিস্ত্রি গুলো তো ওর চারপাশেই তাঁবু গেড়েছিল।কত রকম মাপ ঝোঁক শিখল।শিখল সরকারি মাল ঝেঁপে দিয়ে নিজের উঠোন বাঁধানোর কায়দা।ইট বালি পাথর ধুলোয় কদিনেই হাঁপিয়ে উঠেছিল। আসলে সেটা ছিল গ্রামীণ অর্থনীতিতে শহুরে পোঁচ লাগার উপসর্গ মাত্র।
তবে ওর কদরও বাড়ল।লোকে স্টেশন ধারের জায়গাটাকে ওর নামেই নাম দিয়ে দিল।হয়ত বয়সের সম্মানের কথা ভেবেই। বা সহজ করে ডাকার সুবিধার জন্যে।
ওর আশপাশটা দ্রুত পাল্টাচ্ছিল। যুক্তফ্রন্ট আমলে যে জায়গা ধানি জমি ছিল, সেখানেই দোকানে বসে সব ছোট মেজ বড় কমরেডরা বাবরি ভাঙার খবর শুনলো।রেল লাইন উন্নত হবার সাথে সাথে কাটা পড়াটাও সমানুপাতিক ছিল, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত।অগত্যা হিসাব ব্যস্তানুপাতিক করার জন্যে গজিয়ে উঠল মন্দির। ওর গা ঘেষেই। ও ভক্তি করতে শিখল।
চিত্রনাট্য দ্রুত বদলাচ্ছিল। জন্মদিনের সানাই থেকে শুরু করে শ্রাদ্ধের মন্ত্র অব্দি রপ্ত হয়ে গেছিল। ডান থেকে বাম , বাম থেকে ডান দেখলো। মনে আছে সোভিয়েত রাশিয়া পতনের পরের সকালটা। সেই প্ৰথম ওর মাইক বেঁধে সভা দেখা।তার পরে তো পেট্রোল,ডিজেল,অনাহার,অবিচার,মূল্যবৃদ্ধি এবং ইত্যাদি ছিলই অথবা আছে। ক্রমে দুর্গা,কালী হালে গণেশ সবাই যোগ দিল।লাশ গেলো মার্কেট এলো, প্যাডেল গেলো মোটর এলো, ভিটে গেল মাটি এল(যেহেতু রামকৃষ্ণ দেব বলেছেন টাকা মাটি, মাটি টাকা)।
অতএব বয়স তো কম না।কোনো গাছ পাথর নেই, বা উল্টোটা।
অঙ্কন – সৌরভ চৌধুরী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন